ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে কক্সবাজারের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, লন্ডভন্ড বেড়িবাঁধ

ডেইলি কক্সবাজার •

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পানির উচ্চতা অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় কক্সবাজার জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপড়ে পড়েছে গাছপালা, বিধ্বস্ত হয়েছে বহু ঘরবাড়ি।

জেলার কুতুবদিয়া, মহেশখালী, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের অর্ধশতাধিক গ্রামে ঢুকে পড়েছে জোয়ারের পানি।

কক্সবাজার শহরের অন্তত তিনটি এলাকায় বেড়িবাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিণ ড্রাইভ সড়কেও আচড়ে পড়ছে জোয়ারের পানি।

দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে প্রবল জোয়ারের পানিতে উপড়ে যাচ্ছে গাছপালা। ভাঙন ধরেছে জেটির পল্টুনে ও রাস্তাঘাটে। তবে মানুষের জানমাল রক্ষায় সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপে বেড়িবাঁধের ব্লকে ধ্বস নেমেছে।

মহেশখালীতে জোয়ারের পানিতে মাতারবাড়ির ইউনিয়নের ৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশ ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে পানি। ইতোমধ্যে ৪০টি ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। উপড়ে গেছে গাছপালা। স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে খাদ্য সহয়াতা দেওয়া হচ্ছে। রাতে জোয়ারে পানির উচ্চতা আবারও বৃদ্ধি পেলে এবং তা লোকালয়ে ঢুকে পড়লে তাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে বলে আশংকা করছে স্থানীয়রা।

দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার উত্তর ধুরুং, আলী আকবরডেইল ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ২০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে হাজারো মানুষ।

টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপে জোয়ারের পানি ও ঝড়ো বাতাসে বকিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেড়িবাঁধ। সেন্টমার্টিনের অবস্থা ভয়াবহ। তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে রাক্ষুসে সাগর। ভেঙে যাচ্ছে জেটির পন্টুন।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো: আমিন আল পারভেজ জানিয়েছেন, কক্সবাজার উপকূলের ঝূঁকিতে থাকা লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছিল দু’দিন আগেই। প্রস্তুত রাখা হয়েছিল আশ্রয়কেন্দ্র এবং স্বেচ্ছাসেবকদের। মানুষের জানমাল রক্ষায় আমাদের সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে।

এদিকে ঘুর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ এর ঝুঁকি থেকে কক্সবাজার মুক্ত বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারি আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান।

তিনি বলেন, কক্সবাজারে ৩ নং সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে। সাগরের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৬ ফুট পর্যন্ত বাড়তে পারে। এর প্রভাবে সাগর এখন খুবই উত্তাল।